দু মিনিট আছে? পড়বেন এটা। রিকোয়েস্ট করলাম!
ফেব্রয়ারি মাসের ২৭ তারিখ - রোমে তখনও পাস্তা পিৎজার ক্যাফে গুলো ভর্তি। ফন্তানা দি ট্রেভিতে তখনও থিকথিকে ভিড়। চারিদিকে শোনা যাচ্ছে রোগ হচ্ছে কিছু মানুষের, টিভিতে দেখাচ্ছে নতুন কেস ধরা পড়েছে ইত্যাদি..
কিন্তু তখনও সাধারণ মানুষ অফিস যাচ্ছে, কাজে যাচ্ছে - আজ ভারতের মতই।
তখনও মানুষ বাইরে বেরোচ্ছে, পানশালা যাচ্ছে, আড্ডা দিচ্ছে - আজ ভারতের মতই।
চাকরিতে ছুটি না পাওয়া মানুষ ভাবছে, না গেলে যদি চাকরি চলে যায়? - আজ ভারতের মতই।
ভাবছে, বাড়ির আসে পাশেই থাকবো, কি আর হবে - আজ ভারতের মতই।
ইতালিতে তখন দ্বিতীয় স্টেজ, তৃতীয় সপ্তাহ - আজ ভারতের মতই। এই অব্দি সব মিল। এরপরের ব্যাপারটা ভবিষ্যত।
নিচে ছবিতে দেখুন, ইতালির ভবিষ্যত লেখা হয়ে গেছে। এক লাফে, তৃতীয় সপ্তাহে 1036 থেকে চতুর্থ সপ্তাহে 6362!
ইরানে তৃতীয় সপ্তাহে ছিলো 245, ভারতের আপাতত তৃতীয় সপ্তাহে 276 - ইরান তৃতীয় থেকে চতুর্থ সপ্তাহে 245 থেকে এক লাফে বেড়ে 4747
মিল আরেকটা হচ্ছে, ইতালি বা ইরানে তৃতীয় সপ্তাহেও সবাই এটাকে বিশেষ গুরুত্ব দেননি। অনেকেই ভেবেছেন যার হচ্ছে হোক, আমার হবেনা। ভারতেও আমরা অনেকটাই ক্যাজুয়ালি নিচ্ছি এভাবেই। সবই করে যাচ্ছি, বাইরেও যাচ্ছি অফিসেও যাচ্ছি কিন্তু বুকে ভয় নিয়ে!
আমরা ভাবতেও পারছি না, জাস্ট পরের সপ্তাহ আমাদের জন্য কি বিভীষিকা নিয়ে আসছে। আজকের 276 নাম্বারটা পরের সপ্তাহে 2000/4000/8000/10000 কিছুই হতে পারে। ভারতের মতো জনবহুল ও ভিড় দেশে এটা খুব স্বাভাবিক, যদি আমরা সতর্ক না হই।
ভাবুন, আজ আপনি যে কারণে অফিস বাধ্য হয়ে যাবেন, সেই জব সিকিউরিটির কি হবে যদি আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ আক্রান্ত হন, বা তার থেকেও ভয়ঙ্কর - মারা যান। কে করবে এই চাকরি তখন? কার জন্য করবে?
যে বস আজ কাজে যেতে বলছে, সেই বস সেদিন আসবে না আপনার প্রিয়জনের বা আপনার জানাজা ধরতে। আগে প্রাণে বাঁচুন ভাই, তারপর চাকরির কথা ভাববেন।
সমস্যা হচ্ছে, এই লেখাটা যখন আপনি পড়বেন, তখনও করোনা আপনার ধারে কাছে পৌঁছায়নি। বা পৌঁছেছে, আপনি জানেন না - সিম্পটম বেড়িয়ে আসতে সময় তো লাগে। কিন্তু যখন জানবেন, দেখবেন চারপাশে কেউ বাকি নেই, সেদিন যতই মাথা দেওয়ালে ঠুঁকে বেড়ান, এই তৃতীয় সপ্তাহ আর ফেরত পাবেন না। তখন আপনি ঢুকে পড়েছেন আপনার চারপাশে হাজার হাজার করোনা পজিটিভ রুগী নিয়ে।
- সেটার মানেই আপনি মরবেন এমন না। কিন্তু সরকারের সেইসময় আর কিছু করার থাকবেনা। তার কাছে আপনাদের রাখার জায়গা নেই, পরিকাঠামো নেই। এত সংখ্যক মানুষের চিকিৎসা করার উপায় নেই - সরকার তখন কি করবে? সরকার তখন সেটাই করবে যেটা আজ বাধ্য হয়ে ইতালি করছে.. পাঁচজন রুগী এলে এবং দুটো বেড থাকলে, ওই পাঁচজনের মধ্যে সবথেকে বেটার অবস্থার দুজনকে বেছে নিচ্ছে, বাকিদের মরার জন্য ছেড়ে দিচ্ছে! সরকার তখন এটাই করবে বাধ্য হয়ে!
ইতালির মত উন্নত দেশ এর মোকাবিলা করতে ব্যার্থ সবরকম সুযোগ সুবিধে আমাদের থেকে অনেক ভালো থাকা সত্বেও। ভাবতে পারেন, ভারতের মতো জনবহুল দেশে এই বার্স্ট হলে কি অবস্থা হবে!
ইতালি তবুও জানতে পারেনি কি আসতে চলেছে তাদের দিকে, তারা ক্যাজুয়ালী নিয়েছে, কারণ তাদের সামনে অন্য একটা ইতালির উদাহরণ ছিলো না। পঞ্চম সপ্তাহে তারা হঠাৎ 25000 এর কাছাকাছি! আমাদের সামনে ইতালি সহ বিভিন্ন দেশের উদাহরন স্পষ্ট, এরপরেও আমরা যদি সতর্ক না হই, যদি সংযত না হই এবং নিজেদের বাড়ির মধ্যে আটকে না রাখি, সেল্ফ আইসলেশনে না থাকি তাহলে পরে কেঁদে কিচ্ছু হবেনা। বরং বলা ভালো, আপনার জন্য কাঁদার লোকও পাবেন না.. নিচের ছবিটা, এই পোস্টটা সেইসব মানুষকে দেখান যারা বুঝছে না। তাদের বোঝান, আমরা না জেনেই অনেক বিপদ ডেকে ফেলছি।
বাড়িতে থাকুন। নিজের জন্য, নিজের পরিবারের জন্য এবং নিজের দেশের জন্য! এর একমাত্র ওষুধ এটাই..
No comments:
Post a Comment